৪৯তম বিশেষ বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিতে রাবি শিক্ষার্থীদের জন্য রুয়ার বাসসেবা

৪৯তম বিশেষ বিসিএসের লিখিত (এমসিকিউ টাইপ) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে শুক্রবার (১০ অক্টোবর)। বিশেষ এই বিসিএস পরীক্ষাটি কেবল ঢাকায় অনুষ্ঠিত হওয়ায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের চাকরিপ্রার্থীরা ইতোমধ্যে রাজধানীর পথে রওনা হচ্ছেন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) থেকে ঢাকায় পরীক্ষায় অংশ নিতে আসা প্রার্থীদের সুবিধার্থে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সংগঠন রুয়া (রাবি ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন) ছয়টি বাসের ব্যবস্থা করেছে।

সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) রাত ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা চত্বর থেকে বাসগুলো ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। পরীক্ষার পর শুক্রবার (১০ অক্টোবর) বিকেল ৩টায় ফেরার যাত্রা শুরু হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকা থেকে, এবং বাসগুলো শিক্ষার্থীদের রাজশাহী পৌঁছে দেবে।

রুয়ার যুগ্ম-প্রচার, প্রকাশনা ও জনসংযোগবিষয়ক সম্পাদক আশরাফুল আলম ইমন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, রুয়ার উদ্যোগে এ পর্যন্ত ৭৩১ জন শিক্ষার্থী আবেদন করেছেন। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন বিভাগ ২০০ শিক্ষার্থীর জন্য ৪টি বাস বরাদ্দ দেয়। বাকি শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে রাবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাঈন উদ্দিন রুয়ার সভাপতি মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান-এর সহযোগিতা কামনা করেন।

রুয়া জানিয়েছে, ঢাকায় যাতায়াতের পুরো প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও সুবিধার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

বৃহৎ সঞ্চয়ের সন্ধানে: দুর্বল পাঁচ ব্যাংক একীভূত হয়ে 'ইউনাইটেড ইসলামী ব্যাংক', ২০ হাজার কোটি টাকার সরকারি ভরসা!

ইতিহাস গড়ার পথে বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত। আর্থিক সংকটে জর্জরিত পাঁচটি বেসরকারি শরীয়াহভিত্তিক ব্যাংক একীভূতকরণের এক ঐতিহাসিক প্রস্তাবনা নীতিগতভাবে অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। এই বিশাল সমন্বয়ের ফলে দেশের অর্থনীতিতে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে চলেছে, যার প্রাথমিক লক্ষ্য ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা এবং আমানতকারীদের স্বার্থ সুরক্ষিত করা।

৯ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ব্রিফিংয়ে নিশ্চিত করেন, দুর্বল ও সমস্যাগ্রস্ত ব্যাংকগুলোর ঝুঁকি মোকাবেলা করতেই বাংলাদেশ ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

যে পাঁচ ব্যাংক মিশে যাচ্ছে এক স্রোতে

একীভূত হয়ে যে নতুন ব্যাংকটি গঠিত হবে, তার জন্য প্রাথমিকভাবে 'ইউনাইটেড ইসলামী ব্যাংক' অথবা 'সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক' নামে দুটি প্রস্তাবনা রাখা হয়েছে। যে পাঁচটি প্রতিষ্ঠান তাদের পৃথক অস্তিত্ব বিলীন করে একটি বৃহত্তর শক্তিতে পরিণত হচ্ছে, তারা হলো—

১. ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ২. গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ৩. ইউনিয়ন ব্যাংক ৪. এক্সিম ব্যাংক ৫. সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক

 

আমানত ও চাকরির নিরাপত্তা: সরকারের পূর্ণ আশ্বাস

এই একীভূতকরণের ফলে আমানতকারীদের মনে যে সংশয় সৃষ্টি হয়েছিল, তার নিরসন করেছে সরকারের ঘোষণা। প্রেস সচিব দৃঢ়ভাবে জানিয়েছেন, "একীভূত হওয়ার পর কেউ চাকরি হারাবেন না। আগের আমানত সবাই ফেরত পাবেন।"

তবে আমানত ফেরতের প্রক্রিয়া হবে সুসংগঠিত। জানা গেছে, আমানত সুরক্ষা আইনের সংশোধনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে, যেসব গ্রাহকের আমানতের পরিমাণ ২ লক্ষ টাকা বা তার কম, তারা এককালীন পুরো অর্থ উত্তোলনের সুযোগ পাবেন। বাকি আমানতকারীদের অর্থ ধাপে ধাপে পরিশোধ করা হবে। আমানত সুরক্ষা আইনকে যুগোপযোগী করে তোলার সংশোধনীও উপদেষ্টা পরিষদ অনুমোদন করেছে।

 

প্রাথমিক মূলধন ও মালিকানা কৌশল

নতুন এই ব্যাংকের মেরুদণ্ড শক্তিশালী করতে সরকার এক বিশাল মূলধনের আশ্বাস দিয়েছে। ব্যাংকটির মূলধন হিসেবে সরকার ২০ হাজার কোটি টাকার আর্থিক সহায়তা দেবে। এই অতিরিক্ত পুঁজির জোগান আসবে বাজেট, বৈদেশিক ঋণ এবং প্রয়োজনে ডিপোজিট ইন্স্যুরেন্স ফান্ড থেকে।

মালিকানার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে, ইউনাইটেড ইসলামী ব্যাংক প্রাথমিকভাবে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন থাকবে, যার তত্ত্বাবধানে থাকবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ। এই রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে ব্যাংকটিকে সম্পূর্ণ স্থিতিশীল করে তোলার পর, উপযুক্ত সময়ে তা বেসরকারি মালিকানায় হস্তান্তর করা হবে। সরকার আশা করছে, এই পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পাঁচ বছরের মতো সময় লাগতে পারে। উল্লেখ্য, এই একীভূতকরণের কার্যক্রম বাস্তবায়নে গত ৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নরকে আহ্বায়ক করে একটি আট সদস্যের ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১২ দিনের ছুটি: ৭ অক্টোবর পর্যন্ত, ৮ অক্টোবর থেকে কার্যক্রম শুরু

সম্প্রতি দুর্গাপূজা, বিজয়া দশমী, ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম, প্রবারণা পূর্ণিমা এবং লক্ষ্মীপূজা উপলক্ষে দেশের নিম্নমাধ্যমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ১২ দিনের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এই ছুটি শুরু হয়েছিল ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে, যা চলবে ৭ অক্টোবর পর্যন্ত।

তবে, শিক্ষামন্ত্রণালয়ের এক চিঠিতে ৮ ও ৯ অক্টোবর কোনো পরীক্ষা না নেয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যাতে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছেন। কেউ কেউ মনে করেছেন, ৯ অক্টোবর পর্যন্ত ছুটি বৃদ্ধি করা হয়েছে, যা আসলে সঠিক নয়।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) উপ-পরিচালক মো. ইউনুছ ফারুকী এই বিষয়ে পরিষ্কার করেছেন যে, ছুটি শুধুমাত্র ৭ অক্টোবর পর্যন্ত। ৮ অক্টোবর থেকে শ্রেণি কার্যক্রম পুনরায় চালু হবে। ৮ ও ৯ অক্টোবর শুধুমাত্র পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে না, তবে স্কুল খুলে যাবে।

এটি একটি ভুল বোঝাবুঝির বিষয়, এবং মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় কোনো ছুটি বাড়ানোর কথা বলা হয়নি। যারা ৯ অক্টোবর পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করেছে, তারা ভুল করেছে। সঠিক তথ্য পেতে চাইলে মাউশিতে যোগাযোগ করা যেতে পারে।

 
মন্তব্য করুন

তৃতীয় দিনের মতো শহীদ মিনারে অবস্থান প্রাথমিক শিক্ষকদের

দশম গ্রেডসহ তিন দফা দাবি আদায়ে টানা তৃতীয় দিনের মতো শহীদ মিনারে অবস্থান করছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা। রোববার (১০ নভেম্বর) সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে আসা শিক্ষকরা শহীদ মিনার চত্বরে জড়ো হন। কেউ গাছের ছায়ায় বসে আছেন, কেউ আবার মাইকে বক্তব্য দিচ্ছেন। মাঝে মাঝে দেশাত্মবোধক গান ও কবিতাও শোনা যাচ্ছে তাঁদের অবস্থানস্থলে।

 

শিক্ষক নেতারা জানিয়েছেন, সরকার এখনো তাঁদের দাবির বিষয়ে কোনো আশ্বাস দেয়নি। তাই তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তাঁদের দাবি পূরণ না হলে কর্মসূচি আরও কঠোর করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা।

 

এই আন্দোলনের কারণে সারাদেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। ফলে শিক্ষা কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমে এসেছে। সামনে পঞ্চম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষা ও বার্ষিক পরীক্ষা থাকায় অভিভাবকরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।

 

অন্যদিকে, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। শিক্ষকরা আশা করছেন, দ্রুত সমাধান না এলে তাঁরা ঢাকায় আরও বড় পরিসরে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।

মন্তব্য করুন

অনুচ্ছেদ ৪ক বিলুপ্তি: ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব

অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪ক বিলুপ্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব নিয়ে এসেছে, যা সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি প্রদর্শন সংক্রান্ত। কমিশন এই প্রস্তাবটি তাদের ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’–এ অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি বিবেচনা করছে।

এই লক্ষ্যে, কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের নামে গত বৃহস্পতিবার রাজনৈতিক দল ও জোটসমূহের কাছে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে জানানো হয় যে, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে 'জুলাই সনদ ২০২৫' প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নবিষয়ক বৈঠক শেষ হয়েছে। এখন কমিশন বিদ্যমান সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪ক-এ উল্লিখিত বিধান—যা রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার ও প্রধান বিচারপতির কার্যালয়সহ সকল সরকারি, আধা-সরকারি অফিস, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, এবং বিদেশে অবস্থিত দূতাবাস ও মিশনসমূহে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি সংরক্ষণ ও প্রদর্শনকে সাংবিধানিকভাবে বাধ্যতামূলক করে—সেই অনুচ্ছেদটি বিলুপ্তির প্রস্তাব সনদে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে।

দলগুলোর করণীয়: চিঠিতে রাজনৈতিক দলগুলোকে ১১ অক্টোবর শনিবার বিকেল চারটার মধ্যে তাদের লিখিত মতামত কমিশন বরাবর, অথবা কমিশনের নির্দিষ্ট ই-মেইল বা হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে পাঠানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। প্রয়োজনে কমিশন থেকে আরও তথ্য জানার জন্যও যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

দলীয় প্রতিক্রিয়া: আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান কমিশন থেকে চিঠি পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন, তবে তিনি জানান যে এ বিষয়ে এখনো কোনো মতামত পাঠাননি।

প্রেক্ষাপট: উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগ সরকার ২০১১ সালের ৩০ জুন সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আনে। এই সংশোধনীর মাধ্যমেই শাসনতন্ত্রের প্রথম ভাগে 'জাতির পিতার প্রতিকৃতি' শিরোনামে অনুচ্ছেদ ৪ক যুক্ত হয়, যা নির্দিষ্ট স্থানে জাতির পিতার প্রতিকৃতি সংরক্ষণের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা আরোপ করে।

মন্তব্য করুন

অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম আর নেই

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম
সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক, স্বনামধন্য কথাসাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আজ শুক্রবার বিকেল ৫টায় রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। অন্যপ্রকাশের প্রধান নির্বাহী মাজহারুল ইসলাম  এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন, যিনি হাসপাতালে অধ্যাপক মনজুরুল ইসলামের চিকিৎসার বিষয়ে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছিলেন।

অসুস্থতা ও চিকিৎসা

অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম গত শুক্রবার (৩ অক্টোবর) অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিনি ধানমন্ডিতে ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশে যাওয়ার পথে গাড়িতে থাকা অবস্থায় অসুস্থতা অনুভব করেন। গাড়িচালকের সহায়তায় তাঁকে দ্রুত পার্শ্ববর্তী একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে খবর পেয়ে মাজহারুল ইসলামসহ ঘনিষ্ঠজনরা যান।

চিকিৎসকেরা জানান যে তাঁর ‘ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক’ হয়েছিল। এরপর তাঁকে ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং সেখানেই তাঁর হৃদ্‌যন্ত্রে স্টেন্টিং করা (রিং পরানো) হয়।

 

শারীরিক অবস্থার অবনতি ও লাইফ সাপোর্ট

শনিবার থেকে অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। অক্সিজেন লেভেল কমে যাওয়া এবং ফুসফুসে পানি জমার কারণে পরিস্থিতি খারাপের দিকে গেলে রোববার সন্ধ্যায় তাঁকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়। প্রায় ৪৮ ঘণ্টা লাইফ সাপোর্টে থাকার পর তাঁর অবস্থার সামান্য উন্নতি হলেও পরে আবার অবনতি হয়। অবশেষে, আজ বিকেল ৫টায় চিকিৎসকেরা লাইফ সাপোর্ট সরিয়ে নিলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

 

পরিবার, বন্ধু ও স্বজনদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের মরদেহ আজ বারডেমের হিমঘরে রাখা হবে। সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য আগামীকাল শনিবার সকাল ১১টায় তাঁর মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হবে। এরপর বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। তাঁকে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হতে পারে।

মন্তব্য করুন

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের বিবৃতি

এই রায় ও সাজা একটি মৌলিক নীতিকে পুনঃনিশ্চিত করেছে : যত ক্ষমতাবানই হোক, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস

আজ বাংলাদেশের আদালত যে রায় দিয়েছে, তা সারা দেশ এবং বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তেও প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। এই রায় ও সাজা একটি মৌলিক নীতিকে পুনঃনিশ্চিত করেছে : যত ক্ষমতাবানই হোক, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। ২০২৪ সালের জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষতিগ্রস্ত হাজারো মানুষ এবং এখনও সেই ক্ষত বহনকারী পরিবারগুলোর জন্য এই রায় সীমিত মাত্রায় হলেও ন্যায়বিচার এনে দিয়েছে।

আমরা বছরের পর বছরের নিপীড়নে ভেঙে পড়া গণতান্ত্রিক ভিত্তি পুনর্নির্মাণের সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছি। যে অপরাধগুলো নিয়ে বিচার হয়েছে— তরুণ ও শিশু, যাদের একমাত্র অস্ত্র ছিল তাদের কণ্ঠস্বর, তাদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী বল প্রয়োগের আদেশ, যা আমাদের আইন এবং সরকার–নাগরিক সম্পর্কের মৌলিক বন্ধনকে লঙ্ঘন করেছে। এসব জঘন্য কর্মকাণ্ড বাংলাদেশের মূল মূল্যবোধ— মর্যাদা, দৃঢ়তা ও ন্যায়বিচারের প্রতি অঙ্গীকার— কে আঘাত করেছে।

প্রায় ১,৪০০ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। তারা শুধুই সংখ্যা নন; তারা ছিলেন আমাদের ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক এবং অধিকারসম্পন্ন নাগরিক। গত কয়েক মাসের সাক্ষ্যে উঠে এসেছে, কীভাবে নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী শক্তি— এমনকি হেলিকপ্টার থেকেও— ব্যবহার করা হয়েছিল। এই রায় তাদের ভোগান্তিকে স্বীকৃতি দেয় এবং আমাদের বিচারব্যবস্থায় অপরাধীদের জবাবদিহির নিশ্চয়তা পুনর্ব্যক্ত করে।

বাংলাদেশ এখন বৈশ্বিক জবাবদিহিতার ধারায় পুনরায় যুক্ত হচ্ছে। পরিবর্তনের পক্ষে দাঁড়ানো শিক্ষার্থী ও নাগরিকরা এটি গভীরভাবে উপলব্ধি করেছিলেন, এবং তাদের অনেকেই জীবন দিয়ে মূল্য দিয়েছেন— তাদের বর্তমান উৎসর্গ করেছেন আমাদের ভবিষ্যতের জন্য।

সামনের পথচলায় শুধু আইনি জবাবদিহিতা নয়, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও নাগরিকদের মধ্যে আস্থা পুনর্গঠনও জরুরি। প্রকৃত প্রতিনিধিত্বের জন্য মানুষ কেন সবকিছু ঝুঁকির মুখে ফেলে— তা বোঝা এবং সেই আস্থার উপযুক্ত প্রতিষ্ঠান ও ব্যবস্থা তৈরি করা অপরিহার্য। আজকের রায় সেই যাত্রার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।

আমার দৃঢ় বিশ্বাস, বাংলাদেশ সাহস ও বিনয়ের সাথে সামনে থাকা চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করবে। আইনের শাসন, মানবাধিকার এবং প্রতিটি মানুষের সম্ভাবনার প্রতি অঙ্গীকারের মাধ্যমে ন্যায়বিচার বাংলাদেশে শুধু নামেমাত্র টিকে থাকবে না; এটি প্রতিষ্ঠিত হবে এবং সুদৃঢ় হবে।

মন্তব্য করুন
×