স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি ১ হাজার ৮৯টি মাদ্রাসাকে এমপিওভুক্তির চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তবে শেষ মুহূর্তে নীতিমালার জটিলতায় এর মধ্যে ৬০৯টি মাদ্রাসা বাদ পড়তে যাচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ের নির্দেশে নতুন (২০২৫) নীতিমালার পরিবর্তে পুরোনো (২০১৮) এমপিও নীতিমালা অনুসরণ করতে হওয়ায় এই জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে দীর্ঘদিনের আন্দোলনের পর এমপিওভুক্তির স্বপ্ন পূরণের দ্বারপ্রান্তে এসে অনেক প্রতিষ্ঠানই তালিকায় ঠাঁই পাচ্ছে না। হতাশা আর নিরাশায় ভর করেছে বাদ পড়া মাদ্রাসার শিক্ষক-কর্মচারীদের মন। জমি-সংক্রান্ত শর্তেই বাদ পড়ছে অর্ধেকের বেশি প্রতিষ্ঠান ৩ নভেম্বর সরকার শর্তসাপেক্ষে ১ হাজার ৮৯টি মাদ্রাসাকে এমপিওভুক্তির অনুমোদন দেয়। কিন্তু ২০১৮ সালের নীতিমালায় ইবতেদায়ি মাদ্রাসার জন্য জমির পরিমাণ নির্ধারিত—মহানগরে ১০ শতক, পৌর এলাকায় ২০ শতক ও মফস্বলে ৩৩ শতক। অন্যদিকে ২০২৫ সালের নতুন নীতিমালায় এই শর্ত শিথিল করে যথাক্রমে ৮, ১২ ও ২৫ শতক করা হয়েছিল। পুরোনো নীতিমালা প্রয়োগ করায় জমির শর্ত পূরণ না করতে পারায় বাদ পড়ছে ৬০৯টি মাদ্রাসা। ফলে এমপিওভুক্তির তালিকায় থাকছে মাত্র ৪৮০টি। নীতিমালা বদলের কারণ—ব্যয় সংকোচন সরকারি হিসাব বলছে, সব ১ হাজার ৮৯টি মাদ্রাসাকে এমপিওভুক্ত করতে গেলে বছরে অতিরিক্ত ব্যয় হবে প্রায় ১৪২ কোটি টাকা। প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয় মনে করেছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে এ ব্যয় বহন সম্ভব নয়। তাই ব্যয় কমাতে পুরোনো নীতিমালা কার্যকর করা হয়েছে, যাতে তালিকা নেমে আসে ৪৮০-তে। এতে সরকারের প্রায় ৯০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। এমপিওভুক্ত একটি মাদ্রাসায় ছয়টি পদ থাকে—প্রধান শিক্ষক, তিনজন সহকারী শিক্ষক, একজন কারি/নূরানি শিক্ষক এবং একজন অফিস সহায়ক। এ হিসেবে পূর্ণ তালিকায় এমপিওভুক্ত হলে নতুন নিয়োগ হতো ৬ হাজার ৫৩৪ জন জনবল। তাদের বেতন-ভাতাই বড় অঙ্কের বাড়তি ব্যয় তৈরি করত। মন্ত্রণালয়ের ভেতরেই মতবিরোধ কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. রফিকুল ইসলাম জানান, “প্রস্তাব প্রধান উপদেষ্টা দপ্তর থেকেই অনুমোদিত হয়েছে। আমরা কেবল নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছি।” তবে মন্ত্রণালয়ের অন্য কর্মকর্তাদের মত, নতুন নীতিমালা জারি হওয়ার পর পুরোনো নীতিমালা প্রয়োগের নজির নেই। এতে আইনি জটিলতার আশঙ্কাও রয়েছে—কেউ চাইলে আদালতে যেতে পারে, আর এতে পুরো প্রক্রিয়া আটকে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শিক্ষকদের হতাশা ও আশঙ্কা বর্তমানে ১ হাজার ৫১৯টি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা সামান্য সরকারি অনুদান পায়—প্রধান শিক্ষকের জন্য মাসে ৫ হাজার টাকা, সহকারী শিক্ষকের জন্য ৩ হাজার টাকা। আরও ৫ হাজার ৯৩২টি মাদ্রাসা কোনো ধরনের সরকারি সহায়তাই পায় না। এ অবস্থায় নীলফামারীর জলঢাকা থেকে আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষক মশিউর রহমান বলেন, “প্রথমবার এমপিওভুক্তির ঘোষণা এলে আমাদের আশা বেড়েছিল। কিন্তু কঠোর শর্ত নতুন করে ফাঁদে ফেলল। সরকার বদল হলে আবার টালবাহানা শুরু হবে—শেষ পর্যন্ত হয়তো এমপিও হবেই না।” স্বতন্ত্র ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান কাজী মুখলেছুর রহমান জানান, “সরকার আমাদের দাবি মেনে এমপিওভুক্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এজন্য কৃতজ্ঞ। তবে নতুন নীতিমালায় হলে আরও ভালো হতো। যেহেতু পুরোনো নীতিমালা অনুসরণ হবে, আমরা তা মেনে নিচ্ছি—শর্ত হলো, বাদ পড়া মাদ্রাসাগুলোকে যেন পর্যায়ক্রমে এমপিওভুক্ত করা হয়।” দীর্ঘ আন্দোলনের পর শেষ মুহূর্তে নতুন জট স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকরা দুই যুগ ধরে এমপিও ও জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন। গত কয়েক বছরে আন্দোলন নতুন করে ঘনীভূত হয়, বিশেষত গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর। চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারির শাহবাগে আন্দোলনরত শিক্ষকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের পর সরকার নতুন নীতিমালা জারি করে। তবুও বাস্তবায়ন না হওয়ায় গত ১৩ অক্টোবর থেকে প্রেস ক্লাবের সামনে ২২ দিন ধরে অবস্থান কর্মসূচি চলতে থাকে। এর মধ্যেই আসে ৩ নভেম্বরের অনুমোদনের ঘোষণা—যা আবার জমির শর্তে আটকে গেল।
স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা এমপিওভুক্তির জন্য তালিকা চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ। শর্ত পূরণ করা মাদ্রাসাগুলোর নামের তালিকা প্রথম পর্যায়ে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কাছে পাঠাতে বলা হয়েছে। কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের উপসচিব (মাদ্রাসা-১) মো. রাহাত মান্নান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা এমপিওভুক্তকরণ বিষয়ক একটি সারসংক্ষেপ অনুমোদনের জন্য প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছিল। সে অনুযায়ী কার্যালয় থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে— প্রথম পর্যায়ে, ২০১৮ সালের ‘স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা স্থাপন, স্বীকৃতি, পরিচালনা, জনবল কাঠামো এবং বেতন-ভাতাদি/অনুদান সংক্রান্ত নীতিমালা’ অনুসারে যেসব মাদ্রাসা সব শর্ত পূরণ করেছে, সেগুলোকে এমপিওভুক্ত করতে হবে। তবে এ ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসকের বিস্তারিত প্রতিবেদন গ্রহণ করতে হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে, একই নীতিমালার শর্ত পূরণ সাপেক্ষে জেলা প্রশাসকের প্রতিবেদন অনুযায়ী অবশিষ্ট মাদ্রাসাগুলোকে ধাপে ধাপে এমপিওভুক্ত করা হবে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, প্রথম পর্যায়ের জন্য ২০১৮ সালের নীতিমালার ৬, ৭, ৮ ও ৯ নম্বর অনুচ্ছেদের শর্ত পূরণ করেছে এমন অনুদানভুক্ত স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার তালিকা আগামী ১৫ দিনের মধ্যে পাঠাতে হবে। পূর্বে পাঠানো তথ্যের সঙ্গে নতুন তথ্যের কোনো অমিল থাকলে তা ব্যাখ্যাসহ জমা দিতে বলা হয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে দেশজুড়ে দ্রুত বাড়ছে বেসরকারি মাদ্রাসা স্থাপন, পাঠদান অনুমোদন ও অ্যাকাডেমিক স্বীকৃতি। শর্ত পূরণে ব্যর্থ মাদ্রাসাগুলোকেও এখন শর্ত শিথিল করে স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে। এমনকি যেসব মাদ্রাসার অনুমোদন বাতিল বা স্থগিত ছিল, তাদেরও নতুন করে স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি সরকার মাদ্রাসার জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে—ফলে নতুন ও ভাড়াবাড়িতে পরিচালিত মাদ্রাসাগুলোও এমপিওভুক্ত হওয়ার সুযোগ পাবে। নতুন নীতিমালায় অনুমোদনের সুযোগ সম্প্রতি ‘বেসরকারি মাদ্রাসা (দাখিল ও আলিম) স্থাপন, পাঠদান ও অ্যাকাডেমিক স্বীকৃতি প্রদান নীতিমালা–২০২৫’ জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এই নীতিমালার আওতায় এমন মাদ্রাসাগুলোও অনুমোদন পাচ্ছে, যারা আগে শর্ত পূরণ করতে না পারায় বাদ পড়েছিল। এমনকি ভাড়াবাড়িতে পরিচালিত মাদ্রাসারাও এখন অনুমোদন পাচ্ছে। পুরনো আদেশে নতুন স্বাক্ষর সূত্র জানায়, ২০২৩ ও ২০২৪ সালের আটকে থাকা অনুমোদনের আদেশগুলো নতুন করে জারি করা হচ্ছে। এসব আদেশে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর ছবি সংবলিত প্যাড ব্যবহার করা হয়েছে। আশ্চর্যের বিষয়, কিছু অফিস আদেশে এমন কর্মকর্তার স্বাক্ষর রয়েছে, যিনি বর্তমানে ঐ মন্ত্রণালয়ে কর্মরত নন। শর্ত শিথিল করে স্বীকৃতি গত ৬ অক্টোবরের একাধিক আদেশে দেখা যায়, কয়েকটি দাখিল ও আলিম মাদ্রাসাকে শর্ত শিথিল করে অ্যাকাডেমিক স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, কুমিল্লার দেবিদ্বারের ফুলতলী দাখিল মাদ্রাসার অখণ্ড জমি ৬০ শতাংশের পরিবর্তে ৫৪ শতাংশ থাকা সত্ত্বেও স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। একইভাবে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার ঝাউবোনা মহিলা মাদ্রাসাকেও একইভাবে ছাড় দেওয়া হয়। এছাড়া পাবনা, টাঙ্গাইল, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, সিলেট ও ভোলার কয়েকটি মাদ্রাসার বাতিল আদেশ প্রত্যাহার করে নতুন করে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বিস্তারিত ব্যাখ্যা মন্ত্রণালয়ের এ প্রসঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব এসএম মাসুদুল হক বলেন, “এই অনুমোদন প্রক্রিয়া অনেক আগেই শুরু হয়েছিল। অর্থ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর কারণে সময় লেগেছে। আগের কর্মকর্তা একেএম লুৎফর রহমানের স্বাক্ষরে সেই সময়ের অনুমোদনগুলো এখন কার্যকর হয়েছে।” ভাড়াবাড়ির মাদ্রাসার জন্যও সুযোগ ১৯৯৭ সালের পুরনো নীতিমালার সংশোধিত সংস্করণে এখন যুক্ত হয়েছে ভাড়াবাড়িতে মাদ্রাসা পরিচালনার অনুমোদন। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিঞা মো. নূরুল হক বলেন, “অনেক বেসরকারি মাদ্রাসা আগে অন্য প্রতিষ্ঠানের নামে পরীক্ষা দিত। এখন তারা নিজেদের নামে পরীক্ষা দিতে পারবে। সরকারকে কোনো বাড়তি খরচও বহন করতে হবে না।” এমপিও নীতিমালায় ছাড় কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা সংশোধন করছে। নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী— ইবতেদায়ি মাদ্রাসার জমির পরিমাণ ৩৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করা হচ্ছে। ছাত্রসংখ্যার শর্ত ১৫০ জন থেকে কমিয়ে ১২৫ জন করা হয়েছে। এসএম মাসুদুল হক জানান, “দাখিল, আলিম ও ফাজিল স্তরের এমপিও নীতিমালা সংশোধন ২০২৪ সালের নভেম্বর থেকে কার্যকর হবে।”
রাজনৈতিক দুষ্টচক্রের কারণে কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দখলপ্রাপ্ত হয়েছে, এমন মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরার। তিনি বলেন, “সাংবাদিকতা, শিক্ষা ও দেশ পরিচালনায় ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসার বিশেষ অবদান রয়েছে। তবে অতীতে মাদ্রাসায় জঙ্গি কার্যক্রম এবং শাপলা চত্বরে সংঘটিত গণহত্যার মতো অঘটন ঘটেছে।” বুধবার (১ অক্টোবর) রাজধানীর ঐতিহাসিক সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়ার ২৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন শিক্ষা উপদেষ্টা। তিনি আরও জানান, মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থাকে বাস্তবমুখী, যুগোপযোগী ও আধুনিক করে তোলা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের অবশ্যই ধর্মীয় শিক্ষা ছাড়াও বিজ্ঞান ও আধুনিক বিষয়ের প্রতি মনোযোগ দিতে হবে। চৌধুরী রফিকুল আবরার জানান, ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসার মাঠ ও জমি দ্রুত সমাধান করা হবে, শিক্ষক সংকট দূর করা হবে, নতুন একাডেমিক ভবন নির্মাণ ও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করা হবে। তিনি শিক্ষার্থীদের ধর্ম ও আধুনিক শিক্ষার সমন্বয়পূর্ণ জ্ঞান অর্জনের জন্য উৎসাহিত করেন।
দুর্গাপূজায় মাদ্রাসার ছুটি বাতিল চেয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কার্যালয়ে চিঠি দিয়েছেন মাদ্রাসার কিছু শিক্ষক ও অভিভাবক। বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) মাদ্রাসায় দুর্গাপূজার ছুটি বাতিলের জন্য আবেদন করেন তারা। এদিকে একই দাবিতে বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছেন মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। উল্লেখ্য, আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকবে। মাদ্রাসায়ও দুর্গাপূজা উপলক্ষে দুই দিনের ছুটি রয়েছে। মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের শিক্ষাপঞ্জি অনুযায়ী, ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ছুটি শুরু হবে। ৫ অক্টোবর আবার যথানিয়মে ক্লাস শুরু হবে। এর মধ্যে ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহমের ছুটিও অন্তর্ভুক্ত করেছে অধিদপ্তর। প্রধান উপদেষ্টার কাছে করা আবেদনে বলা হয়, বিগত সরকার আলিয়া মাদ্রাসার ওপর অনেক ইসলামবিরোধী সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়েছিল। তার অন্যতম একটি হচ্ছে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ছুটি মাদ্রাসার ওপর চাপিয়ে দেওয়া, যা ইসলামি শরিয়তের সঙ্গে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক। আমরা অন্য ধর্মীয় অনুষ্ঠানের প্রতি কোনো অসম্মান না করে বলতে চাই, তারা তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করবে এবং ছুটি ভোগ করবে— এটাই স্বাভাবিক। এটা তাদের মৌলিক অধিকার। কিন্তু মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থায় যেহেতু কোনো ভিন্ন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থী নেই, সেহেতু এ সংক্রান্ত ছুটি মাদ্রাসার জন্য অমূলক। যদি কোনো আলিয়া মাদ্রাসায় ভিন্ন ধর্মাবলম্বী শিক্ষক থাকেন, তবে তিনি তার ধর্মীয় ছুটি ভোগ করতেই পারেন, এতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু আলিয়া মাদ্রাসার সব শিক্ষার্থীর ওপর এ সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া শরিয়তবিরোধী। আসন্ন দুর্গাপূজাসহ ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উৎসব উপলক্ষে মাদ্রাসার ছুটি বাতিলের দাবি জানিয়েছেন তারা। লিখিত আবেদনে শিক্ষক প্রতিনিধি হিসেবে সই করেন সিরাজগঞ্জের আল-ফারুক ক্যাডেট মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মো. আনোয়ার হোসেন। অভিভাবক প্রতিনিধি হিসেবে সই করেন তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা টঙ্গীর আলিম প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থীর অভিভাবক জুবায়ের আহমেদ এবং শেখ সাদ বিন জাহান।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রকাশিত বার্ষিক শিক্ষাপঞ্জি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, দুর্গাপূজা উপলক্ষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানভেদে ছুটির দিনগুলোতে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে পূজার আমেজ শুরু হচ্ছে ২৬ সেপ্টেম্বর থেকেই। কারণ ওই দুই দিন (২৬ ও ২৭ সেপ্টেম্বর) সাপ্তাহিক বন্ধের পর ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে পূজার ছুটি কার্যকর হবে। একটানা ছুটি কাটিয়ে ৭ অক্টোবরের পর আবার নতুন উদ্যমে শুরু হবে ক্লাস। একইভাবে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং কলেজগুলোতেও ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে ৭ অক্টোবর পর্যন্ত টানা বারো দিনের ছুটি মিলবে। ৮ অক্টোবর থেকে আবার গরমিল ছাড়া ক্লাস চলবে যথারীতি। অন্যদিকে, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর অবস্থা ভিন্ন। শিক্ষাপঞ্জি অনুযায়ী, এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে দুর্গাপূজার জন্য ছুটি থাকবে মাত্র দুই দিন—১ ও ২ অক্টোবর। তবে এর সঙ্গে যোগ হবে ৩ ও ৪ অক্টোবরের সাপ্তাহিক বন্ধ। ফলে মোট ছুটি দাঁড়াবে চার দিনে। ৫ অক্টোবর থেকে পুরোদমে আবার চলবে পাঠদান। 👉 প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে ছুটি দীর্ঘায়িত হলেও মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তুলনামূলকভাবে সীমিত এই ছুটির মেয়াদ শিক্ষার্থীদের পাঠচর্চার ধারাবাহিকতায় রাখবে এক ধাপ এগিয়ে।
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে (নিম্নমাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তর) চলতি বছরের ৩০ নভেম্বরের মধ্যে নিয়মিত ম্যানেজিং কমিটি গঠন এবং ১ ডিসেম্বর থেকে সব অ্যাডহক কমিটি বিলুপ্ত করার যে পরিপত্র শিক্ষা মন্ত্রণালয় জারি করেছিল, তার কার্যক্রম স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগ থেকে গত ৮ সেপ্টেম্বর পরিপত্রটি জারি করা হয়। ওই পরিপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আজ মঙ্গলবার বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেন। আইনজীবীদের তথ্যমতে, নিম্নমাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটি প্রবিধানমালা–২০২৪ এ চলতি বছরের ২৮ ও ৩১ আগস্ট সংশোধনী আনে ঢাকাসহ বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ড। সংশোধনের মাধ্যমে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মনোনয়নসংক্রান্ত ১৩(১) বিধি এবং যোগ্যতাসংক্রান্ত ৬৪(৩) বিধি পরিবর্তন করা হয়। এই দুই বিধির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এমরান হোসেনসহ চারটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অ্যাডহক কমিটির সভাপতি গত রোববার রিট আবেদন করেন। আদালতে রিট আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ফখরুল ইসলাম। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মো. মুজাহিদুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর মুহাম্মদ আজমী। পরে আইনজীবী ফখরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, দেশের নয়টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে প্রায় ২০ হাজারের বেশি বেসরকারি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই বোর্ডগুলো ম্যানেজিং কমিটি পরিচালনাসংক্রান্ত প্রবিধানমালায় সংশোধন আনে, যেখানে বলা হয়েছে— সরকারি, আধা সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত নবম গ্রেডের নিচে নন এমন কর্মকর্তা এবং অবসরপ্রাপ্ত হলে পঞ্চম গ্রেডের কর্মকর্তা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হতে পারবেন। অর্থাৎ বেসরকারি এসব প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শুধুমাত্র সরকারি বা আধা সরকারি কর্মকর্তা ছাড়া অন্য কেউ হতে পারবেন না। আগে যেখানে সভাপতি নির্বাচনের মাধ্যমে হতেন, সেখানে এখন এই যোগ্যতাসীমা আরোপ করা হয়েছে— যা আবেদনকারীদের মতে বৈষম্যমূলক। রিটে আদালতের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে, সংশোধিত ১৩(১) এবং ৬৪(৩) বিধি কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না। হাইকোর্ট রুল জারি করে ৮ সেপ্টেম্বরের পরিপত্রের কার্যক্রম স্থগিত করেছেন। ফলে বেসরকারি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর অ্যাডহক কমিটি আপাতত কাজ চালিয়ে যেতে পারবে।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাজস্ব খাতে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা-২০২৩ এর ৩য় গ্রুপের ( ০৩ টি পার্বত্য জেলা ব্যতীত ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের ২১ টি জেলা) লিখিত পরীক্ষার ফলাফল আজ প্রকাশিত হয়েছে। পরীক্ষায় ২৩,০৫৭ (তেইশ হাজার সাতান্ন) জন উত্তীর্ণ হয়েছে। ২৯ মার্চ ২০২৪ এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষার্থী ছিলেন ৩ লাখ ৪৯ হাজার ২৯৩ জন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট www.mopme.gov.bd এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট www.dpe.gov.bd -তে ফলাফল পাওয়া যাবে। উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীরা মোবাইলেও মেসেজ পাবেন। মৌখিক পরীক্ষার তারিখ, সময় ও স্থান পরবর্তীতে জানানো হবে।
বেসরকারি স্কুল-কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি হিসেবে শুধু সরকারি কর্মকর্তা (নবম গ্রেডের নিচে নয়) বা অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (পঞ্চম গ্রেডের নিচে নয়) মনোনয়ন দেওয়ার বিধান সংবলিত প্রজ্ঞাপনের কার্যকারিতা স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে আদালত রুল জারি করে জানতে চেয়েছেন যে, বেসরকারি স্কুল-কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি হিসেবে কেবল সরকারি কর্মকর্তা বা অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে মনোনয়নের এই বিধান কেন অসাংবিধানিক ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না। আদেশের দিন ও বেঞ্চ বুধবার (২২ অক্টোবর) বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি আসিফ হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। রিটের কারণ ও আইনজীবীর বক্তব্য বেসরকারি স্কুল-কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি পদে কেবল সরকারি কর্মকর্তাদের মনোনয়নের এই বিধানকে চ্যালেঞ্জ করে অ্যাডভোকেট মোকছেদুর রহমান আবির রিটটি দায়ের করেন। রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন। তিনি বলেন, বেসরকারি স্কুল-কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদে শুধু সরকারি কর্মকর্তাদের মনোনয়নের বিধান বৈষম্যমূলক। এই যুক্তিতেই আদালত প্রজ্ঞাপনটির কার্যকারিতা স্থগিত করেছেন। প্রজ্ঞাপনের মূল বিষয়বস্তু গত সেপ্টেম্বরে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বেসরকারি স্কুল-কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি সরকারি চাকরিজীবী ছাড়া অন্য কেউ হতে পারবেন না। এই পদে নবম গ্রেড বা তার ওপরের পদে কর্মরত কিংবা পঞ্চম গ্রেড বা তার ওপরের পদে অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তারাই দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। এছাড়া, সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সভাপতির প্রার্থীর ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক বা সমমান হতে হবে। সরকারি কর্মকর্তা ছাড়াও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সভাপতি হতে পারবেন। আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়মিত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে। আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয়ক খন্দোকার এহসানুল কবির জানান, বিদ্যমান নিয়মে সামান্য সংশোধন এনে শুধু সভাপতি পদটির জন্য এই পরিবর্তন আনা হয়েছিল।
ঢাকা: মিরপুরের মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে উন্নয়নমূলক কাজের নামে শ্রমিকদের মজুরি বাবদ বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা যায়, মাত্র দুই মাসের মধ্যে শ্রমিকদের পারিশ্রমিক ও মজুরি খাতে ৩,১৮,৮৯,০৫৪/- (তিন কোটি আঠারো লক্ষ ঊননব্বই হাজার চুয়ান্ন) টাকা ব্যয় করা হয়েছে। এই বিপুল অঙ্কের অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা (PPR) সম্পূর্ণরূপে লঙ্ঘন করা হয়েছে। কোটি কোটি টাকার মজুরি, টেন্ডার নেই তদন্ত প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২0২৪ সালের ২০ ডিসেম্বর থেকে ২০২৫ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত (প্রায় দুই মাস) এডহক কমিটির নির্দেশে ৪ কোটি ৬৬ লক্ষ টাকার উন্নয়ন কাজ করা হয়। এই কাজের মধ্যে নির্মাণ ও মেরামতের জন্য ব্যবহৃত শ্রমিক মজুরি বাবদ ব্যয়িত অর্থের হিসাব নিম্নরূপ: কাজের বিবরণ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যয়িত টাকার পরিমাণ রং করা (লেবার) বান্না এন্টারপ্রাইজ ১,৩০,৯২,৯৭৭/- রাজমিস্ত্রী, কাঠ, সেনিটারী (লেবার) মেসার্স শিলা এন্টারপ্রাইজ ৬১,২০,৪৬০/- টাইলস, মোজাইক ও ইলেকট্রিক (লেবার) তানভীর এন্টারপ্রাইজ ১৩,৭৭,৪৭৪/- গ্রীল, অভিভাবক সেড (লেবার) মেসার্স মোল্লা ওয়েল্ড ১২,৪৮,১৪৩/- মোট শ্রমিক মজুরি ব্যয় ৩,১৮,৮৯,০৫৪/- (এছাড়া মালামাল ক্রয় বাবদ আরও ১,২৩,৭৪,৪৩৭/- টাকা নগদে ব্যয় করা হয়)। বিধি লঙ্ঘন করে স্পট কোটেশন তদন্তে ডিআইএ নিশ্চিত করেছে যে, এই বিশাল অঙ্কের মজুরি প্রদানের ক্ষেত্রে কোনো প্রকার দরপত্র বা টেন্ডার আহ্বান করা হয়নি। পিপিআর-এর লঙ্ঘন: পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা (PPR) অনুযায়ী, ৬,০০,০০০/- (ছয় লক্ষ) টাকার অধিক মজুরি প্রদানের ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতামূলক দরপত্রের মাধ্যমে সর্বনিম্ন দরদাতাকে কার্যাদেশ প্রদান করতে হয়। ক্ষমতার অপব্যবহার: কিন্তু মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৬ লক্ষ টাকার সীমা অতিক্রম করে প্রায় সোয়া তিন কোটি টাকা ব্যয় করেছে 'স্পট কোটেশনের' মাধ্যমে। এই পদ্ধতিতে কাজ দেওয়ায় প্রতিযোগিতামূলক দর নিশ্চিত হয়নি, যা আর্থিক অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের পথ সুগম করেছে বলে প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়। বাতিল কমিটি দিয়ে কাজ করানোর অভিযোগ তদন্ত প্রতিবেদন আরও জানায়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক নতুন এডহক কমিটি গঠনের নির্দেশ (১৮/১১/২০২৪) জারির পরও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জনাব মোঃ আখলাক আহম্মেদ পূর্বের (বাতিলকৃত) এডহক কমিটির মাধ্যমেই কার্যক্রম চালিয়ে যান। বাতিল কমিটির মাধ্যমে বিপুল অঙ্কের এই উন্নয়ন কাজ করানো হয়েছে, যা মন্ত্রণালয়ের আদেশ অমান্য করার শামিল। রাজস্ব ফাঁকি উন্নয়ন কাজের জন্য ঠিকাদারদের পরিশোধিত ৩,১২,১৮,০০০/- টাকার ওপর ধার্যকৃত ভ্যাট ও আয়কর সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়নি। শ্রমিক মজুরি বাবদ ব্যয়িত বিপুল অঙ্কের অর্থের ওপরও এই রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া হয়েছে। সরকারি কোষাগারে ফেরতযোগ্য মোট ৩৮,০২,২৫০/- (আটত্রিশ লক্ষ দুই হাজার দুইশত পঞ্চাশ) টাকা অবিলম্বে জমা দেওয়ার জন্য প্রতিবেদনে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লিখিত এই ঘটনা প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক এবং আর্থিক ব্যবস্থাপনায় চরম বিশৃঙ্খলা ও দুর্নীতির ইঙ্গিত দেয়, যেখানে একটি বাতিল কমিটি মাত্র দুই মাসে বিপুল অঙ্কের টাকা টেন্ডার ছাড়াই মজুরি খাতে ব্যয় করে সরকারি বিধিমালাকে পুরোপুরি উপেক্ষা করেছে। ( দ্বিতীয় পর্ব আসছে শিগগিরই, কারা কারা এই লুটপাটে জড়িত তাদেরও পরিচয় তুলে ধরা হবে )