কেআইবি প্রশাসকের অপসারণ চাইল এ্যাব, দুর্নীতির অভিযোগে উত্তাপ

কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি)-এর প্রশাসক মো. আব্দুর রব খানের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে তাঁর অপসারণের দাবি জানিয়েছে অ্যাগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এ্যাব)। সোমবার দুপুরে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাইদুর রহমান খানের সঙ্গে এক বৈঠকে সংগঠনটির নেতারা এই দাবি তুলে ধরেন।

সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে এ্যাবের আহ্বায়ক ড. কামরুজ্জামান কায়সার অভিযোগ করেন, বর্তমান প্রশাসক নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন। তাঁর মেয়াদ শেষ হলেও তাঁকে বহাল রাখার যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা সাধারণ কৃষিবিদরা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না।

মহাপরিচালকের আশ্বাস, তবে নেই ক্ষমতা

বৈঠকে মহাপরিচালক সাইদুর রহমান খান জানান, তিনি বিষয়টি উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা করে আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে সিনিয়র কৃষিবিদদের সঙ্গে বৈঠক করে সমাধানের উদ্যোগ নেবেন। একইসঙ্গে তিনি আশ্বাস দেন যে, সমাধান না হওয়া পর্যন্ত প্রশাসকের মেয়াদ বৃদ্ধির কোনো আদেশ জারি করা হবে না।

তবে মহাপরিচালক বলেন, নিয়ম অনুযায়ী কোনো সংস্থার প্রশাসক নিয়োগের এখতিয়ার সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের। কিন্তু বিদ্যমান পরিস্থিতিতে এ বিষয়ে উপদেষ্টা-সচিব দেখছেন। ফলে এই বিষয়ে তাঁর ব্যক্তিগতভাবে কিছু করণীয় নেই এবং এতে তাঁর কোনো দায়ও নেই।

অর্থ অপচয় ও অবৈধ নিয়োগের অভিযোগ

এ্যাবের সদস্য শাহাদত হোসেন বিপ্লব বৈঠকে অভিযোগ করেন, প্রশাসক নিয়োগের ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করে দায়িত্ব হস্তান্তরের নির্দেশনা থাকলেও তা মানা হয়নি। উল্টো তিনি অপ্রয়োজনীয় উন্নয়ন ও মেরামতের নামে অর্থ অপচয় করছেন। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, শুধু সাব-স্টেশন মেরামতের বিলই ধরা হয়েছে ১ লাখ ৪৫হাজার টাকা, যা স্বাভাবিক ব্যয়ের তুলনায় তিনগুণ।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, প্রশাসক সমাজসেবা অধিদপ্তরের নির্দেশনা অমান্য করে নিজের ইচ্ছেমতো কাজ করছেন। তিনি নিজের ঘনিষ্ঠ পাঁচজনকে অবৈধভাবে নিয়োগ দিয়েছেন এবং নিয়ম ভঙ্গ করে স্থায়ী কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত করেছেন। এমনকি, তাঁর বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা মিলিয়ে মাসে প্রায় ৩ লাখ টাকার বেশি ব্যয় হয়। এছাড়াও, নিয়মবহির্ভূতভাবে একক সিদ্ধান্তে ৮ লাখ টাকার চুক্তি করে অডিটর নিয়োগ দিয়েছেন।

স্বেচ্ছাচারিতা ও বিক্ষোভ

নেতারা অভিযোগ করেন, প্রশাসক আব্দুর রব খান দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি কৃষিবিদদের মতামত উপেক্ষা করে নিজের পছন্দের ও রাজনৈতিকভাবে ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের দিয়ে অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন। এই ঘটনার প্রতিবাদে গত সোমবার রাজধানীর খামারবাড়ি কেআইবি কমপ্লেক্সের সামনে কৃষিবিদরা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন।

এ্যাব নেতারা আরও বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছর পর গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচন আয়োজনের সুযোগ থাকলেও প্রশাসক তা এড়িয়ে গিয়ে লাভজনক কাজে মনোযোগ দিচ্ছেন। তাঁরা অবিলম্বে দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত প্রশাসকের অপসারণ এবং কেআইবিতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার দাবি জানান।