আমিরাতে বাংলাদেশি স্কুলে ৬০০ শিক্ষার্থী ঝুঁকিতে
মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন
প্রকাশিত: ২০:৫০, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাস আল-খাইমা প্রদেশে ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে বাংলাদেশ ইংলিশ প্রাইভেট স্কুল অ্যান্ড কলেজ। ২৮ বছরের পুরনো এই প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে ভবন সমস্যায় জরাজীর্ণ। আমিরাতের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নতুন আইন অনুযায়ী বিদ্যালয় পরিচালনার জন্য তৈরি করতে হবে বাড়তি আয়তনের প্রাতিষ্ঠানিক ভবন।
দ্রুত এ নতুন ভবন নির্মাণ না হলে পরবাসেই ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে ৬ শতাধিক শিক্ষার্থীর জীবন। নতুন আইনে যেখানে ৩৬ স্কয়ার মিটার আয়তনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে সেখানে বর্তমান প্রতিষ্ঠানের দুটো শ্রেণিকক্ষ একসঙ্গে করলেও হবে মাত্র ৩২ স্কয়ার মিটার।
এ ছাড়া ২৫ জন শিক্ষার্থীর অধিক শ্রেণিকক্ষে না রাখা ও ছেলে-মেয়ে আলাদা করে পাঠদানের বিধি-বিধানে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধের উপক্রম হয়েছে। এসব সমস্যায় পড়ে নিয়মিত থাকা ৬৫০ জন শিক্ষার্থী থেকে ৫০ জন ইতোমধ্যে চলে গেছে অন্যত্র।
তবে দুবাই ও উত্তর আমিরাত কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল ইকবাল হোসাইন খান বাংলাদেশি এই প্রতিষ্ঠান বাঁচাতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। ১ লাখ দিরহাম খরচে তৈরি করা হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির অবকাঠামো ও ভবন নির্মাণের নকশা।
যা দেখে ইতোমধ্যে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমতি দিয়েছে আমিরাতের প্রশাসন। কিন্তু ব্যয়বহুল এই ভবন নির্মাণের পর্যাপ্ত অর্থ নেই অলাভজনক এই প্রতিষ্ঠানের ফান্ডে। ফলে পর্যাপ্ত অর্থ যোগানে আটকে আছে প্রতিষ্ঠানটির ভবিষ্যৎ!
বাংলাদেশ ইংলিশ প্রাইভেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের সভাপতি আলহাজ্ব পেয়ার মোহাম্মদ বলেন, ‘বর্তমানে যে ভবনে পাঠদান চলছে এটি পাঠদানের অনুপযোগী হিসেবে ঘোষণা করেছে স্থানীয় প্রশাসন। আমিরাতের আইন ও নির্দেশনা অনুযায়ী পুরাতন ভবন ভেঙে নতুন করে ভবন তৈরি করতে হবে।
ইতোপূর্বে বাংলাদেশ সরকার ও স্কুলের অর্থায়নে ২৬০০ বর্গ ফুটের একটি ভবন তৈরি করা হয়। ভবনটির নাম রাখা হয় বঙ্গবন্ধু-শেখ জায়েদ ভবন। যেটি নির্মাণে বাংলাদেশ সরকার প্রদান করে প্রায় ৫ লাখ দিরহাম। আমিরাতের প্রশাসন ওই ভবনটির মতই পুরো স্কুলের অবকাঠামো তৈরি নির্দেশনা দিচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটি বাস্তবায়ন অত্যন্ত ব্যয় বহুল। স্কুল বাঁচানোর স্বার্থে আমাদের যা টাকা-পয়সা রয়েছে তা দিয়ে আপাতত কাজ শুরু করে দেব। আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী ফের আমিরাতে আসবেন। শিক্ষাবান্ধব নেত্রী এই স্কুল বাঁচাতে যেকোনো পদক্ষেপ নেবেন বলেই আমার দৃঢ় বিশ্বাস।’
পেয়ার মোহাম্মদ আরও বলেন, ‘কাজ শুরু হলে ভবন তৈরির মধ্যবর্তী সময়েও শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত হবে। কারণ কাজ চলা অবস্থায় সেখানে পাঠদানের বাঁধা দেবে স্থানীয় প্রশাসন। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ দূতাবাস ও কনস্যুলেটের কাছে আমরা সাহায্য প্রার্থনা করেছি।’
বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশ স্কুলের পাশেই আমিরাত সরকারের একটি পরিত্যক্ত ভবন রয়েছে, সেখানে অনুমতি পেলে আমরা আমাদের পাঠদানের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারব। অথবা ওই পরিত্যক্ত ভবনটি যদি স্থায়ী অথবা অস্থায়ীভাবে বাংলাদেশ স্কুলের জন্য নিয়ে দেয়া যায় তাহলে আমাদের অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’
প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, ‘রাস আল খাইমা প্রদেশে ৭৫ হাজার প্রবাসীর মধ্যে প্রায় ১৬ হাজার পরিবার রয়েছে। এসব পরিবারের ৬’শ শিক্ষার্থী কেজি ওয়ান থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করছে প্রতিষ্ঠানে।’
তিনি বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানটি থেকে প্রতিবছর এসএসসিতে শতভাগ পাশ করে শিক্ষার্থীরা। ঢাকা বোর্ডের অধীনে চলতি এসএসসি পরীক্ষায়ও অংশগ্রহণ করেছে ২৭ জন পরীক্ষার্থী। সবার সাহায্য-সহযোগিতা পেলে বাংলাদেশি এই প্রতিষ্ঠান সংযুক্ত আরব আমিরাতের নম্বর ওয়ান হিসেবে পরিণত হবে।’
এডুকেশন বাংলা/একে
- ফিনল্যান্ডে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ হয় যেভাবে?
- জাপানী শিক্ষার্থীরা স্কুল পরিষ্কারের কাজ নিজেদেরই কেন করতে হয়?
- দশহাজার টাকা কম বেতন পাচ্ছেন প্রাথমিক শিক্ষকরা!
- শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে পরীক্ষা বাদ
- মহার্ঘ ভাতা সরকারি কর্মচারীদের অধিকার- হাইকোর্ট
- ১৯ বছর ধরে সাঁতরেই স্কুলে যাচ্ছেন শিক্ষক
- যোগ্যতা মাত্র ক্লাস এইট, তবুও তিনি উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী !
- ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের দাপটে বন্ধ হচ্ছে বাংলা মিডিয়াম স্কুল!
- একের পর এক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বেসরকারি স্কুল
- সেলফি তুলতে গিয়ে ২৭তলা থেকে পড়ে শিক্ষিকার মৃত্যু
- ভুল উত্তরে আর লাল কালি দিয়ে কেটে শূন্য নয়
- পরীক্ষায় পাশ করাতে খাতার মধ্যে ঘুষের টাকা!
- পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা নিয়ে ওয়ার্কশপ
- উচ্চ শিক্ষায় ভর্তি হলে ৩ বছরের ভিসা দেবে ভারত
- প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মেয়েদের জন্য ‘গোপন কথা’র বাক্স